নিরব কুমার দাস, নওগাঁ জেলা, প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ হওয়ায় যেন মৃত্যুর ফাঁদে পরিনত হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে উপজেলাবাসী।
রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় খানাখন্দ ও ধুলাবালিতে একাকার হওয়ায় দুর্ভোগে উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে সড়কটির কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংসদ।
জানা যায়, রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২কিলোমিটার সড়কটি ছিল এলজিইডির আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকা জুড়ে মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে এলজিইডি থেকে সড়ক জনপথ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।
সড়কটি রাণীনগর সদর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্যদিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সাথে মিলিত হয়েছে। রাস্তাটি প্রসস্থ এবং মজবুত পাকাকরণের জন্য গত ২০১৮ সালে টেন্ডার আহবান করা হয়।
দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তায় ২৬টি কালভার্ট ও ৪টি সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময় দেয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন। স্থানীয়রা বলছেন, এখন পর্যন্ত রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে।
দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পরে থাকায় রাস্তা জুড়ে ছোট বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন তারা। এছাড়া দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত কালভার্ট এবং সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। অধিকাংশ সেতু-কালভার্ট ভেঙ্গে কাজ না করেই ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে পার্শ্বে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় হতাশায় পড়েছেন উপজেলাবাসি।
পথচারী ও যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এ ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারি মালামাল পরিবহন, জরুরী রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় রাস্তায় খানাখন্দে ও ধুলা-বালিতে একাকার। যানবাহন চালকরা বলেন, যাত্রীরা রাস্তার ধুলাবালি ও খানাখন্দের দুর্ভোগের কারনে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে চায় না।
রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর পর্যন্ত যেতে আগে সময় লাগতো ১০ মিনিট এখন সড়কের এমন দশার কারনে যেতে সময় লাগে ৩০ মিনিট। রাণীনগর থেকে কালীগঞ্জ যেতে প্রায় এক ঘন্টাও বেশি সময় লাগে। এই সড়কটিকে ঘিরে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ চালু করেন আবার কাজ বন্ধ রেখে আবার চলে যান। যেন দেখার কেউ নেই।
এদিকে স্থানীয় সাংসদ আনোয়ার হোসেন হেলাল চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, জনস্বার্থে দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে। নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। দ্রুত এ সড়কের কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বার বার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। যদি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সঠিক সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারে তাহলে তার চুক্তিনামা বাতিল করাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।